ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লক থাকা বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ। প্রায় ২৫-৩০% মহিলা যাঁদের বাচ্চা আসতে অসুবিধা হচ্ছে তাঁরা টিউবের সমস্যার শিকার হতে পারে।
কী কী কারণে ফ্যালোপিয়ান টিউবের সমস্যা দেখা দিতে পারে?
সাধারণ কারণ হল-
• যৌন সংক্রমণ যেমন, গনোরিয়া(Gonorrhea), ক্ল্যামাইডিয়া(Chlamydia)
• যক্ষ্মা(Tuberculosis)
• সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর বা গর্ভপাত করাতে গিয়ে কোনোরকম সংক্রমণ হওয়া অথবা কপার টি বসানো
• অ্যাপেন্ডিক্স বা ওভারিয়ান সিস্ট অপারেশনের পর
• এন্ডোমেট্রিওসিস
টিউব ব্লক আছে কিনা তা কোন কোন পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়?
এক বছর নিয়মিত সহবাস করার পরেও যদি সন্তান না আসে তাহলে বন্ধ্যাত্বের কারণ জানার জন্য পরীক্ষা করা হয়। এই সময় ফ্যালোপিয়ান টিউব-এরও পরীক্ষা করা হয়।
যদি কারো ফ্যালোপিয়ান টিউবের ক্ষতির আশংকা কম থাকে তাহলে তাঁদের হিস্টেরোস্যালফিঙ্গোগ্রাফি (HSG)করার বা সোনো স্যালফিঙ্গোগ্রাফি(SSG) করার কথা বলা হয়। আর যদি ফ্যালোপিয়ান টিউবের ক্ষতির আশংকা বেশি থাকে তাহলে ল্যাপারোস্কোপি আর ডাই টেস্ট(Laparoscopy and dye test) করার কথা বলা হয়।
সোনো স্যালফিঙ্গোগ্রাফি বা SSG কেন করা হয়?
নাম যতই কঠিন হোক না কেন এই পরীক্ষা তেমন জটিল কিছু নয়। ফ্যালোপিয়ান টিউব খোলা আছে কিনা দেখা ছাড়াও এই পরীক্ষার সময় জরায়ুর ভিতরে বা ডিম্বাশয়ে কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে তাও জানা যায়।
এসএসজি কীভাবে করা হয়?
এই পদ্ধতির বিষয়ে পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়ে কনসেন্ট ফর্মে (Consent form)এ সই করানো হয়। ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। স্ক্যান করার আগে মুত্রথলি খালি রাখতে বলা হয়। Vaginaর মধ্যে একটা speculam ঢুকিয়ে জরায়ুর মুখটা দেখে antiseptic lotion দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।
জরায়ুর মুখে একটা ক্যাথেটার (catheter) লাগিয়ে জরায়ুর মধ্য দিয়ে normal saline পাঠানো হয়।
এরপর ultrasound করে দেখা হয় জরায়ুর আশেপাশে normal saline জমা হয়েছে কিনা। যদি saline জমা হয় তাহলে একটা বা দুটো Fallopian Tubeই খোলা আছে।
এছাড়াও জরায়ুর মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা যেমন, ফাইব্রয়েড, পলিপ বা অন্য কিছু তাও এই পদ্ধতিতে ধরা পড়ে।
এই পরীক্ষা কখন করা হয়?
সাধারণত পিরিয়ডের ৭-১০ দিনের মধ্যে এই পরীক্ষা করা হয়। যদি কোনো মহিলা জন্মনিরোধক বড়ি খান তাহলে পিরিয়ডের যে কোনো সময়ে করা যায়। যদি কারোর প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা থাকে বা জরায়ু থেকে ব্লিডিং হয়, জরায়ু বা ফ্যালোপিয়ান টিউবে সংক্রমণের আশংকা থাকে তাহলে SSG করা হয় না।
এস এস জি র জন্য কতক্ষণ সময় লাগে?
প্রস্তুতি থেকে শুরু করে পুরো পরীক্ষা শেষ হতে ১০-১৫ মিনিট সময় লাগতে পারে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি?
সাধারণত এই পরীক্ষা খুবই নিরাপদ আর তেমন কষ্টকরও নয়। পিরিয়ডের সময় যেমন ব্যথা হয় তেমনি সামান্য ব্যথা হতে পারে। যার জন্য ব্যথা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়। এস এস জি-র পর সামান্য সংক্রমণের আশংকা থাকতে পারে। তার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। SSG করার সময় যাতে কোনোভাবেই সংক্রমণ না হয় সেদিকে নজর রাখাক হয়। এছাড়া সামান্য ব্লিডিং বা ডিসচার্জ হতে পারে।
SSG করার দু-একদিনের মধ্যে যদি আপনার জ্বর বা বেশি ব্যথা হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
#tubalpatencytest #sonosalphingography #sonohysterography #saline infusion sonography #SIS